পরকিয়া গল্প

পরকিয়া গল্প

আমার স্ত্রী জুথি পরকীয়ায় আসক্ত। সেটা বুঝতে পারলাম আজকের একটা ভিডিও থেকে। অচেনা এক আইডি থেকে আমাকে ভিডিওটা দিয়েই আইডিটা ডিএক্টিভ করে দেওয়া হয়েছে। আমি ভালো করে দেখছি ভিডিওটা। হ্যা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি পুরো জুথির চেহারা একটা সুদর্শন চেহারার পুরুষের সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায়।


আমি একজন প্রবাসী। জুথিকে তিন বছর আগেই বিয়ে করেছি। বাবা মার পছন্দেই জুথিকে বিয়ে করি। বিয়ের দুমাস পর আমি কুয়েত চলে আসি। এরপর প্রতিবছর একমাসের জন্য আমি দেশে আসি। আমার বাবা মা এপর্যন্ত জুথির বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি। কিন্তু ইদানিং শুনছি জুথি কাউকে কিছু না বলেই বাসা থেকে বের হয়ে যায়। আমি ফোনে জিজ্ঞেস করলে বলে বান্ধবীর বাসায় যাই। তাই আমিও কিছু বলিনা। জুথিকে আমি অনেক ভালোবাসি। তাই ওকে বিশ্বাস করেই আমার সব টাকা ওর একাউন্টেই পাঠাই। আমি বলছি বাবা মার যা কিছু দরকার তুমি কিনে দিবে আর তোমার ইচ্ছা মতো খরচ করবে। ওকে এই স্বাধীনতা দেওয়াটাই মনে হয় আমার কাল হয়ে দারিয়েছে। এর মাঝেই শুনলাম বাবা মা দুজনই নাকি অসুস্থ। তাই জুথিকে ঐ ভিডিওর কথা না বলে বাবা মাকে ডাক্তার দেখাতে বললাম। ও বলল ঠিক আছে।

পাঁচদিন পর শুনলাম বাবা নাকি আর এ দুনিয়ায় নেই।বাবাকে নিজ হাতে কবর দিতে পারলামনা। একারণে নিজের মনটা খুব হাহাকার করছে। কারণ গত দুমাস আগেই ছুটি কাটিয়ে এসেছি। তাই কাজের বেশি চাপ হওয়ার কারণে মালিক আর ছুটি দিবেনা।

তাই ছোট বোন আর জুথিকে বললাম মায়ের বেশি করে যত্ন নিতে। কারণ মা এমনিতেই অসুস্থ ছিল আর বাবার শোকে আরো অসুস্থ হয়ে গেছে।

আমিও বাবা মারা যাবার পর জুথির ভিডিওর কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।

এভাবে আরো দশটি দিন কেটে গেল। হঠাৎ ছোট বোন কল দিলো......

_ভাইয়া মা আর নেই। (কান্নারত অবস্থায়।)

আমি ছোট বোনের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আমি অতি শোকে কান্নাও করতে পারছিনা। মোবাইলটা হাত থেকে পরে গেল। আমার রুমমেট আমাকে দেখে বললো....

_কী হলো মারুফ?

আমার চোখ দিয়ে শুধু অশ্রু বইছে। মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছেনা।

_কী হলো? কান্না করো কেন?

_ভাই আমার মা আর নেই?

বলেই হাউমাউ করে কান্না করে রুমমেটকে জড়িয়ে ধরলাম। তার চোখেও পানি। তিনি হয়তো ভাবছেন বাবা না মরতেই মা টাও ছেড়ে গেল?


তো মালিক সব কর্মচারীদের আবেদনের সাপেক্ষে আমাকে পুনরায় এক মাসের ছুটি দিলো। আমি আর একমুহুর্ত অপেক্ষা না করে ঐদিনের ফ্ল্যাটেই দেশে ফিরলাম। জুথি আমাকে দেখেই হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিলো। বাড়িভর্তি লোক।জুথিকে জিজ্ঞেস করলাম...

_মাহি কোথায়?

_ও কান্না করতে করতে বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। (কান্না করতে করতে জুথি বললো।)

আমি বোনের নিকট গেলাম। দেখলাম কিছু মহিলা ওর জ্ঞান ফেরাতে ব্যাস্ত। একটু পরেই ওর জ্ঞান ফিরলো। আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিলো। আমার চোখেও অশ্রুর বাধ মানলোনা।

এভাবে মনের কস্ট নিয়ে মাকে নিজ হাতে কবর দিলাম। কিছুদিন এভাবে কেটে গেল এখন কিছুটা কস্ট টাকে ভুলতে শুরু করছি।

কিন্তু এখন কেমন জানি আমার মাথা আর বুকে ব্যাথা করে। আমার ছোট বোনেরও একই অবস্থা।আমার থেকেও বোনের অবস্থা খারাপ। আমার বোন বললো বাবা মায়েরও নাকি এরকম মাথা আর বুকে ব্যাথা করতো। জুথিকে জিজ্ঞেস করলাম তার কী কোন মাথা ব্যাথা বা বুকে ব্যাথা করে কীনা? জুথি জানালো তার নাকি এরকম কোন সমস্যা নেই। তো একদিন জুথি বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেল তখন আমার বোন রান্না ঘরে ঢুকে কী যেনো রান্না করছিলো। সাধারণত জুথিই সবসময় রান্না করে। হঠাৎই রান্না ঘরের কোনায় একটা প্যাকেটজাত কিছু দেখতে পেল। সাথে সাথেই আমার কাছে নিয়ে এসে দেখালো,,,

_ভাইয়া দেখোতো এটা কী?

_কোথায় পেলি এটা?

_রান্নাঘরের কোনায় লুকানো ছিল।

_মানে? এটাতো ফসলের কীটনাশক। ওখানে থাকবে কেন?

_জানিনা। আমিতো রান্না ঘরে কখনো যাইনা।ভাবিই রান্না করে।

_আচ্ছা বাদদে মনে হয় তোর ভাবি কোন কাজে রাখছিল ওখানে এটা।

_হয়তো।

এইবলে আমার বোন রান্না করতে চলে গেল। আমিও তেমন কিছু ভাবলাম না।

ঐদিন বিকালে হঠাৎ করেই মাহি অজ্ঞান হয়ে যায়। জুথিকে খবর না দিয়ে আমি একাই ওকে হসপিটালে নিয়ে যাই। ডাক্তার কিছু টেস্ট করতে বলে। টেস্টগুলো করে ডাক্তারকে দেখানোর পরেই তিনি অবাক হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন

_কী হয়েছে ডাক্তার? মারাত্মক কিছু।

_হুম। আচ্ছা আপনার বোন কী কোনো ড্রাগস নেয় মানে নেশাজাতীয় কিছু?

_কী বলেন এসব?

আমি ডাক্তারের কথা শুনে মাহির দিকে রুক্ষ দৃষ্টিতে তাকাই। মাহি আমার তাকানো দেখে ভয় পেয়ে বলে,,,

_বিশ্বাস করো ভাইয়া আমি এমন কিছু নেইনি। আর এগুলোতো আমি চিনিইনা।

_সত্য কথা বল। মিথ্যা বললে তোরই ক্ষতি।

ডাক্তার বললেন,,,

_আচ্ছা এখানে সিনক্রেট না করে বাসায় চলে জান। আর আপনার বোনকে কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি। আমার মনে হয় ওকে ডায়ালাইসিস করাতে হবে। কারণ ওর রক্তে কেমিকেলের পরিমাণ বেরে গেছে।

আমি ডাক্তারের কথা মতো মাহিকে বাসায় নিয়ে আসলাম। বাসায় আসার পর মাহি আমার পায়ে ধরে কান্না করে বলছে,,,

_বিশ্বাস করো ভাইয়া আমি এমন কোন নেশা জীবনেও করিনি।


হঠাৎই ওর কথা শুনে আমি বললাম,,,

_আচ্ছা তুই যেনো কী বলছিলি বাবা মায়েরও কী এরকম মাথা আর বুকে ব্যাথা করতো?

_হুম ভাইয়া।

_আচ্ছা বাবা মাকে তুই ডাক্তার দেখিয়েছিলি নাকি জুথি?

_ভাবি দেখিয়েছে।

_আচ্ছা তাদের মেডিকেল টেস্ট এর ফাইলগুলো আছে?

_হ্যা ভাবি আলমারিতে রেখেছে।

পরদিন আর দেরী না করে বাবা মায়ের টেস্ট গুলো ডাক্তারকে দেখালাম। ডাক্তার যা বলল তা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম.......

ডাক্তারের কথা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। তিনি জানালেন আমার বাবা মায়ের রক্তেও নাকি কেমিকেলের অস্তিত্ব ছিল। ডাক্তারকে বললাম,,,

_এগুলোর কারণে কী মাথা আর বুকে ব্যাথা করে?

_হ্যা। রক্তে এসব কেমিকেল মিশে হার্টকে দুর্বল করে দেয় আর মস্তিষ্ক বিকৃত করে দেয়। ফলস্বরূপ মাথা ও বুকে ব্যথা হয়। আর আমার মনে হচ্ছে এটা কোন ড্রাগস কেমিকেল না। কারণ ড্রাগস কেমিকেলে সাধারণত অনেক সময় লাগে হার্টকে দুর্বল করতে। আর আপনার বোন ও বাবা মায়ের শরীরে যে কেমিকেলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এটা মারাত্মক। ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে রোগীর যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে রোগী মারা যাবে। আর বৃদ্ধ মানুষ হলে তারাতারি মারা যাবে। আর আমার মনে হয় এটা বংশগত কোন রোগ না। কেউ ঢুকিয়ে দিয়েছে শরীরে বা খাবারের সাথে দেওয়া হয়েছে।

ডাক্তারের কথা শুনে আমার কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম। তখনই আমার মনে পরল রান্নাঘরের সেই কীটনাশকের কথা।

আমি আর একমুহুর্ত দেরি না করে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে সেই কীটনাশকের প্যাকেট টা আর বোনকে নিয়ে সরাসরি ডাক্তারের চেম্বারে রওয়ানা দিলাম। আমার বোন আমার কান্ড দেখে হতবম্ব হচ্ছে কিন্তু কিছু বলছেনা।ডাক্তারের নিকট গিয়েই বললাম,,,

_আচ্ছা দেখুনতো এই কীটনাশকটা ওর রক্তের কেমিকেলের সাথে মিলে কীনা?

_এটাতো রক্ত থেকে পরীক্ষা করে বলতে হবে।

_যেভাবে হোক করেন।

ডাক্তার আর কোন কথা না বলে বোনের শরীর থেকে রক্ত নিয়ে ল্যাবে গিয়ে পরীক্ষা করলেন। পরীক্ষা করে তিনি এসে যা জানালেন তা জুথির প্রতি আমার সম্পুর্ণ বিশ্বাসটাকেই বদলে দিলো। অর্থাৎ জুথি প্রতিদিন খাবারে এই কীটনাশক দিয়েই আমার বাবা মাকে ধুকে ধুকে মেরে ফেলেছে। এমনকি আমার বোন আর আমাকেও ছাড়েনি।

এর প্রতিশোধ আমায় নিতেই হবে,,,,


এভাবে কিছুদিন পর জুথি বাসায় আসলো। এখন মাহি আগবাড়িয়ে রান্না করে জুথিকে রান্না করতে দেয়না। বলে,,,

_ভাবি এতোদিনতো আপনিই কস্ট করে রান্না করছেন এখন নাহয় আমিই করি।

জুথিও কিছু না বলে চলে আসে। আমার সাথে কথা বলতে চায় কিন্তু আমি ইচ্ছা করেই কথা বলিনা। ও হয়তো ভাবছে মা মারা যাবার কস্টে আমি চুপচাপ হয়ে গেছি। কিন্তু ও হয়তো জানেনা আমার মনে প্রতিশোধের আগুন জলছে।

ঐ দিন রাত্রেই আমি ওর ঘুমানো অবস্থায় HIV এর ইনজেকশনটা পুশ করে দেই। ঘুমরত অবস্থায় থাকার ফলে ও হয়তো আলাপ পায়নি। পরদিন সকালে হঠাৎই বলে,,,

_শুনছো আমি একটু বান্ধবীর বাসায় যাবো। অনেকদিন যাওয়া হয়না।

_যাও এতে আমার থেকে অনুমতি নেওয়ার কী আছে? আমি যখন ছিলামনা তখনতো অনুমতিনাওনি।

_রাগ করেছো? আচ্ছা যাবোনা।

_সেটা তোমার ব্যাপার।

জুথি হয়তো ভাবছে মা মারার যাওয়ার কারণে হয়তো আমার মন ভালো নেই তাই এরকম রূঢ় আচরণ করছি কিন্তু ও তো জানেনা আমার মনে প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে। তো ও কিছু না বলে ওর বান্ধবীর বাসায় যাবার জন্য রেডি হচ্ছে। বান্ধবীর বাসায় যেতে হলে যে মানুষ এতো সাজগোজ করে সেটা আমার আগে জানা ছিলনা। আমি কিছু বললামনা আমার এখন কাজ হলো ওকে ফলো করা।

যেই বলা সেই কাজ। বাসায় ছোট বোন মাহিকে রেখে জুথির পিছু নিলাম। দেখলাম ও একটা রিকশায় উঠলো আমিও একটা রিকশাতে উঠে রিকশাওয়ালাকে বললাম যথেষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে জুথির রিকশাকে ফলো করতে। প্রায় আধা ঘন্টা যাওয়ার পর জুথিকে দেখলাম একটা পার্কের সামনে নামলো। আমিও কিছুটা পিছে নেমে পরলাম। ভাড়া মিটিয়ে সামনে তাকাতেই আমার সন্দেহ সত্যি হলো। ফেইসবুকে যেই ভিডিওতে জুথিকে একটা ছেলের সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেছিলাম সেই ছেলেটাই ওর রিকশার ভাড়া মিটালো। কিন্তু ওরা পার্কের দিকে না যেয়ে কই যাচ্ছে?

পার্ক থেকে দশমিনিট ওদের পিছু পিছু হাটলাম। এরপর আমার সব বিশ্বাসকে পেছনে ফেলে জুথি ছেলেটির সাথে একটি আবাসিক হোটেলে ঢুকলো আমি চিন্তা করলাম যাক ঘুঘু ফাঁদ এ পা দিয়েছে। এখন আমার বাকী কাজটা সেরে ফেলতে হবে।

আমি আর সেখানে এক মুহুর্ত অপেক্ষা না করে বাসায় ফিরে আসলাম। বাসায় এসে বোনকে আমার সব প্ল্যান এর কথা বললাম। ও খুশিতে কান্না করে দিলো হয়তো ভাবছে বাবা মায়ের খুনিকে শাস্তি দিতে পারবো।

জুথি বিকালের দিকে বাসায় আসলো। আমি জানা সত্ত্বেও জিজ্ঞেস করলাম,,,

_এতক্ষন কোথায় ছিলে?

_বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলাম। তুমি বিশ্বাস করবেনা ও আমাকে আজকে আসতেই দিতে চাচ্ছিল না কিন্তু আমি বললাম আমার স্বামী আবার আমাকে ছাড়া থাকতে পারেনা। ও হেসেই কুটিকুটি খেলো। (এসব বলে জুথিও হাসছে)

আমি সব কিছু জেনেও না জানার ভান করে বললাম।

_ও। আচ্ছা শুনো তোমার এ্যাকাউন্টে যেই টাকা গুলো দিয়েছিলাম সেগুলো লাগবে। আমি নতুন জমি দেখেছি। পছন্দ হয়েছে তাই অন্য কেউ কেনার আগেই আমি কিনে ফেলতে চাই। মাত্র ১৫ লাখ টাকায় এত বড় জমি পাবোনা। তোমার এ্যাকাউন্টেতো আমার ১৭লাখ টাকার মতো ছিল।

জুথি আমার কথা শুনেই মুখটা কালো করে ফেললো। কী বলবে খুজে পাচ্ছেনা।

_কী হলো কথা বলোনা কেন?

_আসলে কীভাবে যে বলি...

_কী কোন সমস্যা হয়েছে?

_আসলে এ্যাকাউন্টে এখন ৫লক্ষ টাকা আছে।

_মানে? বাকী টাকা গেলো কোথায়?

ওর কথা শুনে আমার মাথা খুব খারাপ হয়ে গেল। আমি আর সহ্য না করে দিলাম একটা জোড়ে চড় বসিয়ে। চড় দেওয়ার সাথে সাথে ও নিচে পরে গেল। চড়ের পাওয়ার এতো ছিল যে ওর ঠোট ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। আমি যথেষ্ট মাথা ঠান্ডা করে চিন্তা করলাম যে টাকা আছে ওগুলোই এখন যেভাবে হোক আমার এ্যাকাউন্টে নিতে হবে। এখন আমার টাকার উপর কোন মনোযোগ নেই আমার চিন্তা হচ্ছে কীভাবে প্রতিশোধ নেবো।

পরদিন ওর এ্যাকাউন্ট থেকে যত টাকা ছিল সব আমার এ্যাকাউন্টে নিলাম। এখন শুধু রাতের অপেক্ষা।

এদিকে আমার বোন প্ল্যানমাফিক সব কিছু রেডি করে রেখেছে।


প্রতিশোধময় সেই কাঙ্ক্ষিত রাত....


জুথি ঘুমিয়ে আছে। ক্লোরোফরম দিয়ে আরো অচেতন করে ওকে কোলে করে পুরাতন স্টোর রুমে নিয়ে আসলাম। আমার বোন মাহি আগে থেকেই পাটের দড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। শক্ত করে খুটির সাথে বেধে এক মগ পানি ওর মুখের দিকে ছুড়ে মারলাম। হুরমুরিয়ে ও উঠে অবাক হয়ে গেল....

_কী হলো মারুফ? তোমরা আমাকে এই অন্ধকার রুমে বেধে রেখেছো কেন?

সাথে সাথেই জোড়ে একটা চড় বসিয়ে দিলাম। জুথি হতবম্ব হয়ে গেল...

_কী হলো আমাকে মারছো কেন? (কান্না করতে করতে।)

আমি শান্ত ভঙ্গিতে বললাম...

_আমার বাবা মাকে কেন মেরেছিস?

আবার চড় মারলাম।

_এমনকি আমার বোন আর আমাকেও মারতে চেয়েছিলি?

আবার চড় মারলাম।

_আমার সাথে ধোকাবাজি করে অন্য পুরুষের সাথে নষ্টামি কেন করলি?

আবার চড় মারলাম।

_আমি এতো কস্ট করে টাকা ইনকাম করি আর তুই সেগুলো পাতার মতো উড়ালি?

আবার চড় মারলাম।

আমার এতোগুলো চড় খেয়ে আর প্রশ্ন শুনে ও প্রায় অচেতন অবস্থা। আবারো মগের পানি ওর দিকে ছুড়ে মারলাম। হুড়মুড়িয়ে উঠে বলল....

_বিশ্বাস করো কিছুই আমি করিনি। আমাকে ছেড়ে দাও।

_ছেড়ে দেবো? সত্য কথা কীভাবে বের করতে হয় আমার ভালোভাবেই জানা আছে। মাহি ব্লেড টা দেতো।

জুথি ব্লেড দেখেই ভয় পেয়ে গেল। আমি ওর হাতের মধ্যে ধারালো ব্লেডের একটা পোঁচ দিলাম। ও চিৎকার করছে।

_চিৎকার করে লাভ নেই এই অন্ধকার ঘরে তোকে কেউ বাঁচাতে আসবেনা। ভালোয় ভালোয় সব সত্যি বলে দে।

এই বলে আরেকটা পোঁচ দিলাম ব্লেডের। ও চিৎকার করে বলছে,,,

_বলছি বলছি। আমায় আর মেরো না প্লিজ। মোহনকে আমি বিয়ের আগে থেকেই ভালোবাসতাম। কিন্তু বাবা মা জোর করে তোমার সাথে বিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের পরও আমি ওকে ভুলতে পারিনি। তুমি যখন বিদেশে ছিলে তখন মোহনের সাথে আবার যোগাযোগ হয়। ওর পারিবারিক অবস্থা ভালো ছিলনা। তাই তোমার টাকা ওকে দিয়ে সাহায্য করতাম।এর মাঝে মোহন আমাকে বলে ও নাকি আমাকে বিয়ে করতে চায়। তখন আমাদের লোভ ছিল তোমাদের সম্পত্তির উপর। তাই আমরা প্ল্যান করলাম তোমাদের সকলকে মেরে ফেলার। তাই খাবারের সাথে কীটনাশক মিশিয়ে তোমার বাবা মাকে মেরে ফেলি। বিশ্বাস করো আমি এতো কিছু ভাবিনি। মোহনের ভালোবাসায় এতোই অন্ধ হয়ে গেছিলাম যে ও যা বলতো তাই করতাম। এমনকি ওর সাথে শারিরীক সম্পর্ক করতেও দ্বিধাবোধ করিনি।

আমার বোন মাহি এগুলো শুনে লোহার শিকটা দিয়ে ওকে যেই মারতে আসলো ওমনি আমি শিকটা ধরে ফেললাম।

_কী করছিস? ওকেতো এতো সহজে মারা যাবেনা।

_ওর মতো পিশাচিনী কে আমি আর বাঁচতে দিবোনা। তুমি ছেড়ে দাও আমায়! (কান্না করতে করতে।)

_ধৈর্য্য ধর। বাবা মাকে যেভাবে ধুকে ধুকে মেরেছে ওকেও সেভাবে ধুকে ধুকে মারবো।

জুথিও কান্না করছে।

_এখন যতই হাহাকার করিস না কেন কোন লাভ হবেনা। তোর ভিতরে আমি HIV ভাইরাস ঢুকিয়ে দিয়েছি। তোর মোহনও ছাড় পাবেনা। কারণ কালই তুই ওর সাথে নষ্টামি করেছিস। আজ থেকে তুই এই ঘরে বন্দী থাকবি। আর আমার বাবা মাকে যেভাবে মেরেছিস সেভাবেই মরবি।

এটাই তোর প্রায়শ্চিত্য করার একমাত্র উপায়।


এই বলে জুথিকে স্টোর রুমে আটকে আমরা দুভাইবোন বেরিয়ে আসলাম।মাহির চোখের অশ্রু মুছে দিয়ে বললাম,,,


_চল আজ রেস্টুরেন্টে দুভাইবোন ইতিহাস সেরা এক পার্টি দিবো যা ইতঃমধ্যে কেউ দেয়নি।

এই বলে আমরা নতুন জীবনের দিকে পা বাড়ালাম।


(সমাপ্ত)