সমাজ নিয়ে কিছু বাস্তব কথা

সমাজ নিয়ে কিছু বাস্তব কথা

"কি জানি, কোন ছেলের সাথে রাত-বিরাতে আ কা ম করে আসে। শুনলাম..গতকালও নাকি একটা বিয়ে ভেঙ্গেছে মেয়েটার।"


"তো ভাঙ্গবেনা? এমন মেয়েকে কে বিয়ে করবে? রাত ১১ টায় বাড়ি ফিরে।"


মেঘ তড়িঘড়ি করে বাসায় ফিরছিল। গুলির মোড়ে আসতেই পেছন থেকে ফিসফিস করে কথাগুলো তার কানে ভেসে আসছিল। পেছনে এক পলক তাকিয়ে দেখলো পাশের বাড়ির মিনা আর সাজেদা কাকী। সে তাদের দিকে তাকাতেই তারাও তড়িঘড়ি করে পা চালাল। মেঘ দাঁড়ালোনা। পা চালালো বাড়ির উদ্দেশ্য। পরে কোনো একদিন জবাব দিবে সে এইসব কথার। আজ তাকে জলদি বাড়ি ফিরতে হবে। মা কল করেছে, 'বাবা যে ভীষণ অসুস্থ।"


"মা...বাবার কি হয়েছে?"


"তুই এসেছিস মা? দেখনা, তোর বাবা বলছে তার বু'কটা নাকি খুব ব্য'থা করছে।"


"কোথায় ব্য'থা করছে বাবা?..দেখি..."


ছ'ট'ফ'ট করছে তার বাবা। মেঘ তড়িঘড়ি করে ব্যগ থেকে বু'ক ব্য'থার ঔষধটা খাইয়ে দিলেন ওনাকে।


"বাবা এখন ভালো লাগছে খানিকটা?"


"হ্যাঁরে মা। ঘুম পাচ্ছে।"


"আচ্ছা, ঘুমাও তবে। আর মা, খাবার দাও..."


মেঘ ফ্রেশ হয়ে খেতে বসতেই মা বলল,


"মা, আর কত আমাদের জন্য করবি? এইবার নিজের কথাও ভাব।"


মেঘ তাকায় মায়ের চোখের দিকে। চোখের ভাষা ঝা'প'সা। কাঁদছে তার মা! 


"মা...বাবা অসুস্থ বলেই কিন্তু আমাকে নার্সের কাজটা করতে হচ্ছে। নয়তো বাবা নিজেই আমাকে কাজ করতে দিতোনা। আর কাজ করাতো পা'প নয়। আর সবাই কাজ করতে পারেনা। নিজের পরিবার চালাতে পারেনা। তার জন্য যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, সাহসের প্রয়োজন হয়। যা সবার নেই।"


সকালে..


মিনা আর সাজেদা কাকী'র চোখে চোখ পড়ে মেঘের। তারা মেঘকে দেখে আবার ফি'স'ফি'স শুরু করেছে। মেঘ হাসিমুখে গিয়ে বলল,


"ভালো আছেন কাকীরা?"


আচমকা মেঘ কথাটি বলাতে ভ'র'কে যায় তারা। নাক বেংচি কে'টে মিনা বললেন,


"অন্যের ভালো তোকে কে দেখতে বলেরে মেঘ?"


"না মানে, আপনাদেরতো আর অন্যের ভালো থাকাটা স'হ্য হয়না, তাই আমি খোঁজ নিলাম।"


"এই ন'ষ্টা মেয়ে মুখ সামলে কথা বল।"


কঠিন চোখে তাকায় মেঘ। নিজেকে সামলে গ'ম্ভী'র কন্ঠে বলল,


" আমার পরিবারের অন্ন-বস্ত্র আমি কাজ করে যোগান দেই, কেউ আমার ঘরে গিয়ে দিয়ে আসেনা। আপনারা কি আমার বাবা'র ঔষধের টাকা দিয়ে আসবেন?তাতো পারবেন না, আপনারা পারবেন, অন্যের সমালোচনা করতে। অবশ্য কারো সম্পর্কে কিছু বলতেও যোগ্যতা লাগে। আমার মনে হয়, আপনাদের সেই যোগ্যতা নেই।"


সমাজ

এমন আরও বাস্তবিক গল্প পড়ুন।