শিক্ষনীয় বাস্তব গল্প

শিক্ষনীয় বাস্তব গল্প

(১৮+ এলার্ট দেওয়া হলো) 

আপনার রাতে শুধু মনে পড়ে, আপনার ঘরে বউ আছে? খবরদার আমার কাছে আসবেন না। স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর শরীরে স্পর্শ করা ধর্ষকের কাজ। এই কাজ কখনো স্বামীর হতে পারেনা। 


" এই তুপ খুব বড় বড় কথা বলতেছিস। তোকে কি আমি বিয়ে করেছি স্ত্রীর অধিকার দেওয়ার জন্য। তোকে না বলেছি আমি অফিস গেলে, ফোন দিয়ে বিরক্ত করবি না। এরপরে তুই আমাকে বারবার ফোন দিস ক্যানো? স্ত্রীর অধিকার চাইনা তোর দিচ্ছি তো এইভাবে না পোষালে চলে যা আমার জীবন থেকে। 


নীরার শাড়ির আঁচল বুক থেকে ফেলে দিয়ে ঝাপিয়ে নীরার উপর মেহেদী। নীরা ধাক্কা দিয়ে মেহেদীকে ফেলে দিয়ে বলে, 


অনেক সহ্য করেছি আপনার অত্যাচার। থাকতে চাইনা আমি এই সম্পর্কে। যেই সম্পর্কে ভালোবাসা নাই, সম্মান নেই, আছে শুধু ধর্ষক স্বামীর অত্যাচার। যে আমাকে বিয়ের ছয়মাস থেকে প্রতি রাতে ধর্ষণ করে শুধু। আমি কি চাই একবারো ভেবে দেখেনা। আমার কখন কি লাগবে একবারো জিজ্ঞেস করেনা। কখনো বলেনা নীরা তোমার শরীর কেমন? কখনো অফিসে যেয়ে ফোন দেয়না নীরা তুমি কি খাইছো। রাতের পর রাত জেগে অপেক্ষা করি একসঙ্গে ডিনার করবো। কিন্তু আমার জামাই আমার অপেক্ষায় দুই বালতি পানি ঢেলে, অন্য মেয়ের সঙ্গে ডিনার করে আসে ? যে অফিস থেকে বাড়িতে ফিরে অন্য মেয়ের ছোঁয়া নিয়ে। যাকে আমি ফোন দিলে, ভালোবাসার কথা না বলে বিরক্ত হয়। আমাকে শুধু প্রয়োজন যৌ'ন'তা সঙ্গমের সময়।"


তুই কি বলতে চাস। তোকে যে এইটা দিই এইটাই তোর কপাল। তোকে বিয়ে করে আমার জীবন টা নষ্ট হয়ে গেছে। আমার মুড টাই খারাপ করে দিলি। 


" আপনার দেওয়া নখের চিহ্ন, দন্তের আঘাত, হাতের থাপ্পড়ে সারাক্ষণ আমি কুকিয়ে বেড়াই। রাত হলেই শরীরের উপর ঝাপিয়ে পড়েন। এই শরীর টা আপনার প্রতি রাতে প্রয়োজন হয় শুধু। কিন্তু এই শরীরটার মানুষ সুস্থ কি না একবারো জিজ্ঞেস করেন না? এরকম স্বামীর ঘর করতে চাইনা। আমাদের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হয়েছে বলে এতো আঘাত সহ্য করতে হবে। কোথায় লেখা আছে? বিয়ে করার আগে তো আপনি আমাকে পছন্দ করে বিয়ে করেছিলেন? তাহলে রাতের পর রাত ক্যানো এত অবহেলা? অফিসে যেয়ে অন্য মেয়ের কাছে যাওয়া এগুলা জানার পরেও মুখ বুঝে সহ্য করেছিলাম। এইভেবে আপনি একদিন ঠিক হয়ে যাবেন? কিন্তু এইভাবে দেখতে ছয়মাস হয়ে গেলো। আমাদের সম্পর্কে কোনো উন্নতি নাই। "


" এই মাথা কিন্তু খুবই গরম। আমাকে আর একটা কথা বললে চৌড়িয়ে গাল লাল করে দিবো তোর? তোর মতো মেয়ের অভাব আছে নাকি আমার জীবনে? চলে যাবি চলে যা রাতবিরাতে ড্রামা বন্ধ কর। "


" আপনি তো শুধু এটাই পারেন। জানতাম এই কথা বলবেন আপনার মেয়ের অভাব হবেনা। কিন্তু শুনে রাখুন আমি পতিতা নয় আমি আপনার স্ত্রী। কাল থেকে আর সেইটা থাকবো না। আমি ল্যাগেজ গুছিয়ে রাখছি। চলে যাচ্ছি ডিভোর্স লেটার পাটিয়ে দিয়েন, এই সম্পর্ক থেকে মুক্তি দিয়ে দিবো? "


" তুই এক্ষুনি আমার সামনে থেকে দূরে সড়ে যা। তোর মতো মেয়ে মেহেদীর কাছে হাত পরিষ্কার করা টিস্যুর মতো আসবে। "


" যারজন্য আমার সঙ্গে এরকম করেন একদিন প্রকৃতি তার রিভেঞ্জ নিবে। যাওয়ার আগে এই কথা বললাম। মনে রাখবেন তখন এই নীরাকে কাছে পাবেন না। বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলবেন? "


নীরা ল্যাগেজ নিয়ে মেহেদীর রুম থেকে বের হয়ে যায়। মেহেদী ছুট টাই পড়েই ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল হয় মেহেদী উঠে দেখে নীরা নাই রুমে। তখন তার মনে পড়লো গতকাল রাতের কথা। মেহেদী মুখে মেকি হাসি দিয়ে রুম থেকে বের হলো। মনে মনে বললো অবশেষে জঞ্জাল পরিষ্কার রাস্তা থেকে। মেহেদি অফিসে যেয়ে তার পিয়ে ইভাকে সবটা বলে। ইভা বলে স্যার আমাদের রাস্তা থেকে কাটা পরিষ্কার হয়েছে। এখন কি করবেন আপনি? কি করবো তোমাকে বিয়ে করবো? তোমাকে বিয়ে করার জন্য এতকিছু?  


কিন্তু স্যার নীরা ম্যাডাম কি ডির্ভোস দিবে আপনাকে? দিলেও ওনার পাওনা চাইবে না?  


নীরা এরকম মেয়ে না ও আমাকে এমনিতেই ছাড়বে তুমি এসব চিন্তা করোনা। 


চারমাস পর___


" আমি সাইফকে ভালোবাসি। আপনাকে শুধু বিয়ে করেছিলাম আপনার টাকার জন্য। আমার সব পাওয়া হয়ে গেছে। এখন আপনাকে আমার লাইফের দরকার নাই। "


" দেখো ইভা আমি তোমাকে ভালোবাসি বলে। নীরাকে ছাড়ার পর অন্য কোনো মেয়ের কাছে যাইনাই। তোমাকে পাওয়ার জন্য এতোকিছু ছাড়লাম তারবিনিময়ে তুমি আমার সাথে চিট করলে? "


" যে ছেলে রুপের জন্য পাগল। তার সাথে আর যাই হোক সংসার হয়না। কারণ রুপ কখনো চিরস্থায়ী নয়। যে আমার জন্য প্রথম স্ত্রীকে বিনাদোষে ডিভোর্স দিতে পারে। সে যে আমার সঙ্গে ভবিষ্যতে এরকম করবে না এটার কি গ্যারান্টি। তাছাড়া আমি সাইফকে ভালোবাসি আপনাকে নয়? এই নেন ডিভোর্স লেটার ভালো ভালো সাইন করে দিবেন। আজ থেকে এই বাড়ি আমার। কারণ কাবিন হিসাবে এই ফ্লাট টা ছিলো। "


" মেহেদী কিছু না বলে বাধ্যহয়ে সাইন করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। "


(*)


একদিন শপিংমলে নীরা শাড়ি কিনতে যায়।মার্কেটে যেয়ে মেহেদীর সঙ্গে দেখা হয়। মেহেদী জিজ্ঞেস করে কেমন আছো নীরা? আলহামদুলিল্লাহ আপনি? আমি ভালো নেই নীরা। ইভা আমাকে ঠকিয়েছে। আমি সব জানি মেহেদী। আপনি যে মেয়েকে ভালোবাসেন সে অন্য ছেলের সাথে প্রেম করতো? এতকিছু জানার পরেও তুমি আমাকে এইভাবে ডিভোর্স দিয়ে গেলে। একটাবার কি মানা করা যেতো না। আমাকে সত্যির পথে আনতে পারতা না, মোহের পথ থেকে। 


আপনি অন্ধকার পৃথিবীতে ডুব দিয়েছিলেন মেহেদি। আপনার কাছে তখন ভালোবাসা না মেয়েদের শরীর টা ছিল মেইন। 


এমন সময় গাড়ি পার্ক করে ভিতরে ঢুকে নীরার বর্তমান স্বামী রুহুল। এসে নীরাকে জিজ্ঞেস করে এই ছেলেটি কে? সময় নষ্ট করতেছো ক্যান? অনেক শপিং করতে লাগবে তো আমাদের 


" এ আমার বন্ধু রুহুল। গাড়ি পার্কিং করতে এতো সময় লাগে? "


" হ্যালো আমি রুহুল। নীরার হাসবেন্ড। আমাদের গত ১৫ দিন আগে বিয়ে হয়েছে। আপনাকে তো বিয়ে বাড়িতে দেখলাম না। "


কথাটা শোনার পর মেহেদী মন থেকে একটা বড় শক খায়। চোখে পানি চলে আসে। চোখের পানি আড়াল করার জন্য নীরাকে বলে আমি আসি নীরা। তোমাদের সাথে পরে দেখা করবো৷ আমার কাজ পড়ে গেছে একটু জরুরি তলব 


রুহুল বলে কি বলছেন সবেমাত্র দেখা হলো কফি খাই চলেন একসঙ্গে। 


" না ভাই আমার পক্ষে সম্ভব নয় আমি আসি" 


( ★) 


হয়তো উনি ব্যস্ত নীরা। তাই চলে গেলো। আমরা শপিং করে বাড়িতে ফিরি। আমাদের হাতে সময় নাই?  

" নীরা টিস্যু দিয়ে কপালের ঘাম গুলে মুছে বলে, চলো রুহুল। "


 মেহেদী শপিংমল থেকে বের হয়ে আসে। কান্না করতে থাকে মসজিদের সামনে এসে । মনে মনে বলে সবই আমার অতীতের ফেলে কর্মফল। 


 #সমাপ্ত


এমন আরও অনেক বাস্তবিক গল্প পড়ুন।